সোমবার, নভেম্বর ২৬, ২০১৮

কারাদন্ড শ'বছর



কালো কুর্তাধারী বাবু শুধাইলেন,
প্রমাণ কি?

আমি বলিলাম,
আজ্ঞে, প্রমাণ তো নাই হুজুর!
তবে জানি আমি নাম তাহার।
আনিয়া তাহাকে এই দরবারে,
জেরা করিলেই প্রমাণ হইবে, হুজুর।



নাম যে মিথ্যা নয়, তাহার প্রমাণ কি?
একই নামে কত মানুষ হইয়া থাকে! জানা আছে বৈকি?
যাচাই করিয়াছিলে, নাম মিথ্যা নাকি সত্যি?
দেখিয়াছিলে নাম সার্টিফিকেট;
জন্ম নিবন্ধন কিংবা টিকা কার্ডে?
সাধে কি কহে! মূর্খ জাতে?

আজ্ঞে, মাফ করিবেন হুজুর,
আমি মূর্খ, জ্ঞানহীন, ক্ষমা চাহিতেছি প্রভুর।
তবে তাহার কিছু আলোকচিত্র রহিয়াছে আমার নিকটে।
যদি অভয় আর অনুমতি দেন, পেশ করি দরবারে?

আলোকচিত্র কি তুমি নিজহস্তে তুলিয়াছো?

আজ্ঞে মাফ করিবেন হুজুর,
তাহার সরাসরি সাক্ষাতলাভ করিতে পারিনাই।
সেই সৌভাগ্যে আমার কুলায় নাই।
সোশ্যাল মিডিয়া নামক পোষ্ট অফিসে,
তিনি ওই আলোকচিত্র;
পাঠাইয়াছিলেন আমার নিকটে।

হইতে পারে না প্রাপক ভুল ছিলো?
হইতে পারে না বেনামি পত্র ছিলো?
যত্তসব মূর্খ যত্রতত্র!
আফিম এখন কতো কিলো?
দরদাম ঠিকঠাক জানা আছে তো?

মাফ করিবেন, ক্ষমা চাহিতেছি প্রভুর।
নেশা-ভাঙ ছাড়িয়া দিয়াছি,
সপ্তাহে ছ'দিন আসর জমে, আখড়া অন্তর।
সবই তো হইলো, আজ্ঞে হুজুর!
সবই কহিলাম!
সর্বশেষ বাঁচিয়া রহিয়াছে প্রমাণ, তার কন্ঠ সুমধুর।
যদি অনুমতি দেন, শুনুক দরবার?

অনুমতি দেওয়া হইলো!

[ক্যাসেট বাজিতে আরম্ভ করিলো,
সমস্ত দরবার মন্ত্রমুগ্ধ হইয়া শ্রবণ করিতে লাগিলো।
অতঃপর ক্যাসেটের অন্ত ঘটিলো।
সমস্ত দরবার কন্ঠের প্রশংসায় ভাসিলো]

বাহ বা! মারহাবা! আহা!
কি কন্ঠ! পরাণ জুড়ানো! শ্রুতিমধুর।
এই নারী এমন করিতে পারে!
অসম্ভব! অমঙ্গল হইবে এমন কল্পদাতার!
বাহির হও, খালি করো দরবার!
যদি এক মুহূর্ত ও দাঁড়াইয়া থাকো-
শাস্তি হইবে! কারাদন্ড শ'বছর।


- আ.ব.স. রাজ।
ভোর ০৬টা ৩৬ মিনিট।
সোমবার | ২৬ নভেম্বর, ২০১৮।  

শনিবার, নভেম্বর ০৩, ২০১৮

মধ্যদুপুর

তুমি গভীর রাতের শেষে প্রথম সূর্যোদয় ছিলে আমার।
তারপর হারিয়ে গেলে।
এখন আমার সূর্যোদয় হয় না,
এখন আমি সকাল দেখি না।
তোমার কি এখন মধ্যদুপুর?
চকচকে রোদ্দুর আলো চারিদিক?

- আ.ব.স. রাজ
#_পথ_হারা_পথিক_


শুক্রবার, নভেম্বর ০২, ২০১৮

ক্ষণিকা

সহস্র কোটি শতাব্দী পেরিয়েছে,
চায়ের দোকানটার আলো মলিন হয়েছে দিনকে দিন।
ইলেক্ট্রিসিটির কানেকশন এর জন্য বাতির নিচে তৈরী ঢাকনাটা ক্লান্ত হয়ে খুলে পড়েছে। ঠিক হবে হবে বলে আর ঠিক হয়নি ওটা।
সময় হয়ে ওঠেনি যে!
সময় হবে কি করে?
দেয়াল ঘড়িটা সময় গুনতে গুনতে, সেকেন্ডের কাটা টিকটিক করতে করতে;
দম ফুরিয়ে এসেছে ওর। ওর নিরাপত্তার কাচটা ভেঙ্গেচুরে একাকার।
ধুলোবালি আর মাকড়শার জালের কারখানা এখন ঘড়িটা।
দেয়ালের রঙে কলঙ্ক লেগেছে,
ওতে লেগেছে সহস্রকোটি বিজ্ঞাপনের পোষ্টার,
লেগেছে, ছিড়েছে, উঠেছে।

সহস্র কোটি শতাব্দী পেরিয়েছে,
ঠিক ঠাহর করতে পারিনা কতটা সময়।
আমি একের পর এক কড়া লিকারের চা গিলেছি;
বাতাসে মিশিয়েছি সিগারেটের ধোয়া।
ভেবেছি, ভাবছি; তোমার কথা,
বলেছিলে, তুমি আসবে।
অপেক্ষার প্রহরে সমস্তসব ক্লান্ত;
তবু তুমি আসো নি....

-আ.ব.স. রাজ
#_পথ_হারা_পথিক_

অযোগ্য

কবিদের ভালোবাসা হতে চায় না কেউ,
তারা চায় কবিদের কবিত্ব হতে;
কবির কবিতা হতে।
কবিরা ভালোবাসতে জানে না বোধহয়,
কবিরা শরীরের বাঁকে বাঁকে কাব্য বুনতে জানে।
তারা আসে, প্রেম প্রেম খেলা খেলে।
কবিতার জন্ম হয়।
তারপর তারা চলে যায়।

তারা কবিতা চায়,
তারা কবিকে চায় না।
তারা কাব্য ভালোবাসে;
কবিকে ভালোবাসে না।

- আ.ব.স. রাজ।
রাত ০৮: ৪১
২৩-১০-২০১৮